আজ্ঞা
রঙের ভেতর আমি
খুব নীচু হয়ে আছি। ঈশ্বরের মতো একটা ব্রাশ দিয়ে রঙ মেশাচ্ছো তুমি। স্থির হয়ে আছে
আমাদের ত্বক, ইতিহাস ও বিয়োগচিহ্ন। অঙ্কের ক্লাস থেকে পালানোর আগে তোমার অসুখ থেকে
বেরিয়ে আসছে একটা নীল রঙ
অনুপস্থিত
একটা রঙ আমাদের বর্ষাবাসে জাতিস্মরতার ঘর খুলে দিচ্ছে। চুঁইয়ে পড়া জলরঙে
অচেনা হাত ধুয়ে আমাদের মাংস ভাগ করে দিচ্ছেন ঈশ্বর। সে মাংসে তেল-হলুদ-মশলা দিতে
ভুলে যাচ্ছে সময়।
শূন্য। তবু
হাসি থেকে রঙ লেগে যাচ্ছে জিভে। জিভ থেকে বোবা একটা স্বাদ কিছুতেই ফিরছে না
সংসারে। রেসিপিতে বাড়তি জল দিচ্ছো তুমি।
বিশুদ্ধ
আমাদের
ঠিকানায় একটা শব্দের আলো পাঠিয়েছে কেউ। নাম মিলিয়ে দেখছে এক ধূসর পত্রবাহকের
আত্মা। আমাদের প্রেম একটু একটু করে ঝুঁকে পড়ছে। মৃত শিশুর হস্তাক্ষরে উলটে যাচ্ছে
কালির দোয়াত।
শব্দ সাজাতে
দেরি হচ্ছে। নামের ফলক থেকে গড়িয়ে পড়ছে আমাদের স্মৃতিহীন রঙ। রঙে মিশে যাওয়া নতুন
শব্দ থেকে আমরা হাঁটছি নক্ষত্রের দিকে। নক্ষত্রের উপকথার ভেতর ছাই মাখা মাংস ফেলে
আবার বন্ধ করে দিচ্ছি দরজা
পুরনো ঘুমন্ত
দরজায় টোকা দিচ্ছে কেউ। খুলে দেখছি, বুনো স্ট্রবেরী জ্যূসের শূন্যতা। কাঠের অভিনয়
থেকে বোকা হাসি ঢুকে যাচ্ছে তোমার-আমার মাঝখানে
অনাহত
পায়ের ছাপে
একটা না-থাকা জ্যোৎস্নার দেহবোধ। অনেক দেরী করে আমরা ফিরছি দরজায়, মুছে যাওয়া
নামের অপেক্ষায়। জাতিস্মর এক বৃষ্টি গান গাইছে। গানের পাশ দিয়ে আমি তোমার ভালবাসা
শনাক্ত করতে যাচ্ছি
বাড়িটা
গোলাপ-বাগিচার মতোই। আমরা ফুলেও আছি, মৃত্যুতেও আছি। সব ফুল দেহতন্ত্রের মতো
আমাদের ছুঁয়ে ফেলে। ছিঁড়ে ফেলে একটা ছোট্ট মিসক্যারেজ।
শব্দটা মৃত
সন্তানের মতো বেরিয়ে আসে ভোরের স্কুলিং থেকে। পাখির নীল শব্দ থেকে বহুদূরে উড়ে
যাচ্ছে অগণন পাখির ঝাঁক। তোমার ডাকনাম ভিজে যাচ্ছে ঘামে।
মণিপুর
হলুদ একটা রঙ থেকে তোমার হাত স্বরবর্ণ
হয়ে উঠছে। বর্ণহীন
উচ্চারণে প্রেমের গল্প সাপলুডো খেলছে তোমার মৃত সন্তানের মুখে। নষ্ট হয়ে যাওয়া
ব্যঞ্জনবর্ণে লুকিয়ে পড়ছি আমরা।
এরপর আর রান্নাঘর নেই। খড়কুটো জ্বালানো
এক ভুষো গন্ধের পাশে পড়ে আছে বোবা ঈশ্বরের কঙ্কাল। হলুদ অরিয়ল পাখি শিশুর স্বরে
কথা বলছে।
জন্ম থেকে উঠে পড়ছে শিশু। তার ফেলে
যাওয়া পায়েসের গন্ধে চমকে উঠছে ছায়াপথের পায়ের আঙুল। আমাদের হাত অসাড় হয়ে উঠছে।
স্বাধিষ্ঠান
রক্তবস্ত্রের
কথা তৈরি হচ্ছে আমার শব্দ ভেঙে। প্রেমের গান থেকে ঘুমচোখে হাঁটছে ইতিহাস, নদী ও
কুয়াশা। আবছা সোনালী আলোর জন্মান্তর থেকে আমি আয়না মুছে ফেলছি। শিশুপাখিদের
ধুলিখেলায় জট বাঁধছে
আমাদের চিঠির
শব্দ প্রাচীন এক অশ্বত্থ গাছের মতো। হাওয়া বইছে আমাদের রক্তের ফিসফাসে। কেউ বেঁধে
গিয়েছে লাল সুতোর আদর
বাঁধনের ঠিক
নীচে আমাদের ভোরের স্বপ্ন চমকে উঠছে। এরপর প্রাতরাশে লুচি আর পায়েস।
No comments:
Post a Comment