Thursday, August 9, 2018

গুচ্ছ কবিতা সুমন মল্লিক








হেমন্তহিন্দোল

ভুলিনি হেমন্তের সেই নিরালা মোলাকাত ৷
আমি জলধোঁয়ায় এঁকেছিলাম দিব্য অনুরাগ ৷
কাঁপা কাঁপা চোখে সেই প্রথমবার দেখেছিলাম
ঈশ্বরের অনুপম আবাহন ৷
নীরবতা থেকে লাফ দিয়ে উঠে এসেছিল
চাঁদ –
আমি গোটা সন্ধ্যা জোছনায় ভিজে ভিজে
গলে গেছি চুপচাপ ৷


উড়ন্ত স্বর্গ

ঘুম আসার আগে যেসব আলো জমে ঘরে
তাদের মাঝেই স্বর্গ দেখতে পাই সাময়িক ৷
আদিম কফিন থেকে আমার পাললিক আত্মা
বাঁশি বাজায় রোমান্টিক সুরে ৷
বেডশিটে রাতুল বেদনা মুড়ে সমুদ্র আঁকি
চারদেয়ালে... ফ্যানের ঘূর্ণিতে
ঝুলিয়ে দিই রং বেরঙের আঁচল ও ওড়না ৷
সারাদিনের আয়নাখেলার পর
প্রতিরাতে ঘুম আসার আগে
এক অলৌকিক মুগ্ধতায় আমি স্বর্গে প্রবেশ করি
আর আমার কামরাঙা পিপাসা শুষে নেয় নীরবে
এক দিব্য পাহাড়ি অর্কিড ৷


রাতের বিছানায়

আর কিছু নয় , শুধু কাগজের ওপর কলমের শব্দ ৷
দু-একটা স্বপ্ন শ্মশান টপকে এনেছে ঘুম
অথচ ঘুমোতে আমার ভয় করে ভীষণ –
ঘুমের ভেতর তোমাকে হারিয়ে ফেলি বারবার ৷
তাই তো নির্ঘুম বড় বেশি প্রিয় আমার
আর নির্ঘুমেই প্রেম ও পীড়া জড়াজড়ি করে শুয়ে থাকে ৷


প্রেমিক

কালো সিঁড়ি নেমে গেছে বুকের ভেতর
তাতে সফেদ আতুর পদছাপ ৷
যে তোমাকে ছুঁয়েছিল বৃষ্টির মাঝখানে
তার তনমনে আজ এক ঈশ্বরীয় পাপ ৷


সৌম্যাবেশ

কীভাবে অসন্ধিত করি বলো
চুম্বক ও চুম্বন – মাথাভর্তি চন্দ্রদাগ আর বৃষ্টিবীণা ৷
মনে হয় তোমার সাথে আজও
হেঁটে চলেছি রোহিনীর নিরালা পাহাড়ে ;
ক্লান্তি এলে বসে পড়ছি ইউ-টার্নের ওই কাঠের বেঞ্চে ৷
আমার সময় ও সফরে ২৪ X ৭ জড়িয়ে আছো
স্বর্ণলতার মতো ; উর্বর ভৈরবী তুমি...
ঘুম থেকে নির্ঘুমে ঢেলে দিচ্ছো মনোলোভা মণিমঞ্জুষা ৷
কীভাবে ভেঙে দেবো সমুদ্রসাঁকো –
দৌড়ে চলেছি প্রতিদিন তোমার দিকেই ৷



No comments:

Post a Comment

'রাষ্ট্র মানেই পরবাসী নিজের ঘরেতে ' : বেবী সাউ

ক্রোড়পত্র  " It's coming through a hole in the air,  from those nights in Tiananmen Square.  It's coming ...