৪১)
কামড়াচ্ছি । হাত কামড়াচ্ছি। পা কামড়াচ্ছি।
নিজের হাত পা নিজেই কামড়াচ্ছি। এপাশে নর্দমা । ওপাশে ভাগাড় । পিছনে এডিস । সামনে অসংখ্য দুঃশাসন ।বাইরে রক্তের বন্যা। ভিতরে দুরারোগ্য ক্ষত ।
পুড়ছি । কাঠে পুড়ছি । কয়লায় পুড়ছি । সৌরতাপে ।
কাঠে কয়লায় সৌরতাপে ও অশান্তিতে ।
যজ্ঞের জন্য আগুন জ্বেলেছিল আহুতি সেবনে ব্যস্ত ।
তোমার ছেলে , আমার মেয়ে এখন আহুতি । তোমার বন্ধু , আমার স্ত্রী । তোমার হৃদয় , আমার মস্তিষ্ক ।
রামের ভাই , রহিমের দাদা । আহুতি বাড়ছে । আগুনও বাড়ছে । আয়োজকদের বাড়ছে পুঁজি ।
দৈববাণী হয়েছে । আমি শুনেছি । তুমি শুনেছ ।
সকলেই শুনেছে । বলতে ভয় পাচ্ছি আমরা । সেই বাণীর মর্মার্থ পুঁজিতেও পুঁজ । পুঁজির দেহেও দেখা যাবে ক্ষত । পুঁজ গড়াবে । জ্বালা করবে । জ্বলবে ।
৪২)
তোমার ওখানে সূর্য । তোমার ওখানে রোদ । ওখানে
আলো । আমার এখানে খাঁখাঁ । এখানে লু । নিশুতি ।
একটা রাস্তা । দুদিকে দুটুকরো আপেল । একটুকরো
পচা । অন্যটা ভাল । অথচ দুটোই মরা । লাস ।
সূর্য থেকে ঠিকানা মেলে । সূর্য থেকেই নৌকাডুবি ।
তোমার জন্য ঠিকানা । আমার সলিল-সমাধি ।
জলে মরুতে প্রণয় চায় । অকুস্থল তোমার ড্রয়িংরুম ।
রঙে তুলিতে ডিভোর্স হয় । হসপিটালের মর্গ দরকার ।
জায়গা চাই । আমি উদ্বাস্তু হই।পৃথিবীর সব প্রীতিভোজ সুসম্পন্ন হয় । সমস্ত অভ্যর্থনায় থাকে লালগোলাপ ।
সূর্যের নাম আপেল । আপেলের নাম সূর্য । মর্গ একটি
বিভ্রান্তি কেবল ।
৪৩)
খোলা রেখেছি । সমস্ত জানালা । সব দিকের । আলো
আসার আশায় । উত্তাপও স্বাগত । স্বাগত ঝড় ।সকলে আসুক ।
রাতের টেবিলে খাবার । মিলনের জন্য অধীর । ঘ্রাণ ও বর্ণ সহ । রসনা রসায়ন চেনে । জৈব ও অজৈব স্বাদ
ডাকে । ডাকে বিন্দু বিন্দু । বিন্দুতে সাগর । সাগরের নিচে মৈণাকের চূড়া ।
বিবস্ত্র হয়েছি । ত্বকের আচ্ছাদন ছিঁড়েছি । খুঁড়েছি মাসের আস্তরণ । অস্থিতে সন্ধান অস্তি ও নাস্তির ।
সময় চলে যাচ্ছে । যাবার পথও লাগাম সহ । লাগামকে বিশ্লেষণ কর । মন্থন যেন নিজেকে চেনে । দন্ড যেন নিজেকে । আর সময়ময় বাজুক আমি । আমি চিনুক নিজেকে বহুবচনে ।
৪৪)
দিন ঘন্টা পলের হিসাব । আকাশের মধ্যে জলের হিসাব । জলের মধ্যে আকাশ । বাতাসের মধ্যে শব্দ । শব্দের মধ্যে ঘ্রাণ । ঘ্রাণের মধ্যে চোখ । কান্না । লবণ ।
মিষ্টতা।এইসব হিসাব গুছিয়েছি । গুছিয়ে বসে আছি ।
আঁতুড়ের হিসাব । পলাশের।বার্ধক্যের । হিসাবের চুল ।
চুলের ভগ্নাংশ নিয়ে বসে আছি ।
সোনার কাঠি আনো।হিসাবের গায়ে ঠেকাও । ভুলভ্রান্তি
যা আছে হিসাবে তাকে ইতিবাদী কর । রক্ত থেকে রস নাও । রস থেকে রক্ত টেনে নাও । হিমোগ্লোবিন নাও ।
নাও অণুচক্রিকা । সব নাও। শবটুকুও নাও । অনুগ্রহ
করে হিসাবকে বৈধতা দাও ।
দিন ঘন্টা পল চেয়ে আছে।চেয়ে আছে পল পল। ঝলমল হয়ে উঠুক ভদ্রাসন। দলিল সহ । পরচা সহ । মিউটেশন সহ ।
৪৫)
আলো জ্বালতে গেছি । জ্বালাতে পারিনি । বরং নিভিয়ে ফেলেছি । মন খারাপ হয়ে গেছে । অপদার্থ আমি । আলো জ্বালাতে পারিনি । জ্বালাতে পেরেছি
তোমাকে । জ্বালাতন হলে তুমি । তন থেকে মন তুলে নিলে । সেই তনে আমি সাধনা বানাবো । সাধ্যি করে আমি না কে হঠাবো । পড়ে থাকবে সাধ । হয়তো পরমাদ । তবু সাধ নত হবে না । নম হবে না । তুলসীদাস বা প্রেমচাঁদ কেউ একজন সরব হন । নিভাও নিভাও । মুখের কথা নিভাও । পদার্থ হবার চেষ্টা করো না । রঙে রসে প্রাণে অপদার্থ হও ।
তন পুড়ল না দীপ্ত হলো দেখি।মন ছাড়া তন জ্বলে না ।
No comments:
Post a Comment